Explore insightful, comprehensive, and interpretative stories that resonate with your curious mind. Drive into depth with Tvista, where stories come alive!

বরগুনায় যুবদল নেতাকে রগ কেটে হত্যায় শিবির জড়িত নয়

বরগুনায় যুবদল নেতাকে রগ কেটে হত্যায় শিবির জড়িত নয়

বরগুনার পাথরঘাটায় নাসির উদ্দিন (৩৮) নামে এক সাবেক যুবদল নেতাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। ছাত্রদলেরপ্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচি পালন শেষে শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার পথে এ ঘটনাঘটে। নিহত নাসির পাথরঘাটা পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. শাহজাহানের ছেলে।তিনি উপজেলা যুবদলের সদস্য ছিলেন।

বুধবার (১ জানুয়ারি) দুপুরে পাথরঘাটা উপজেলার কালমেঘা ইউনিয়নের ঘুটাবাছা এলাকার নূরিয়া স্কুল সংলগ্ন সড়কে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে কালমেঘা ইউনিয়নের ঘুটাবাছা এলাকার বাসিন্দা ফরিদ গাজীর ছেলে মো. হাসান (২৩) ও মাহবুবের ছেলে রাব্বির (২৫) বিরুদ্ধে।
পাথরঘাটা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক চৌধুরী মো. ফারুক জানিয়েছেন, অভিযুক্ত দুজনেই নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সদস্য।

ভিডিও দেখুন এখানেঃ https://archive.ph/RCdKy

বুধবার সকালে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে পাথরঘাটা নতুন বাজার ব্রিজের উত্তর পাড়ে খাদ্য গুদামের সামনে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে নাসির মোটরসাইকেল চালক হাসানকে থাপ্পড় মারেন। ওই জের ধরেই নাসিরকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা স্থানীয়দের।
পাথরঘাটা পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি হাফেজ আলমগীর বলেন, "নাসির হাসানকে চড়-থাপ্পড় মারলে আমরা স্থানীয়ভাবে মীমাংসা করে দেই।"
পাথরঘাটা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক চৌধুরী মোহাম্মদ ফারুক বলেন, "আমরা যতদূর জানতে পেরেছি, ব্যক্তিগত বিরোধের জেরে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। অপরাধী যেই হোক, দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।"

কিন্তু যমুনা টেলিভিশন পাথরঘাটা থানার নামহীন পুলিশ কর্মকর্তার বরাত দিয়ে দাবি করে যে বরগুনায় যুবদল নেতার রগ কেটে হত্যায় অভিযুক্ত দুই ছাত্রলীগ কর্মী বর্তমানে স্থানীয় ছাত্রশিবিরের রাজনীতির সাথে যুক্ত।

সংবাদ টি দেখুনঃ https://archive.ph/8Ifkx

এরপর বিএনপির মিডিয়া সেল এবং বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যমুনা টিভির সংবাদকে ভিত্তি করে রগ কেটে হত্যায় শিবিরের সংশ্লিষ্টতা দাবি করা হয়।

মূলত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া কিছু চিত্রে অভিযুক্ত হাসান ও রাব্বিকে বগুড়ায় জামায়াতে ইসলামির এক প্রোগ্রামে উপস্থিত থাকতে দেখা যায়। এই চিত্রের ভিত্তিতে তাদের ছাত্রশিবিরের সাথে যুক্ত বলে দাবি করা হয় এবং ছাত্রশিবিরের উপজেলা শাখার সভাপতি হাফেজ মো. রাকিব হাসানের বাড়িতে হামলা করা হয়।

এ ব্যাপারে বরগুনা জেলা জামায়াতের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি শামীম আহসান বলেন, “তারা যে ছবির ভিত্তিতে ওই দুজনকে জামায়াত-শিবির দাবি করেছে, সেটা ঠিক না। জামায়াতের মিটিংয়ে বহিরাগত হিসেবে তারা ঢুকেছিল। তাদের বের করে দেওয়া হয়েছিল। এ বিষয়টি আমরা প্রেস ব্রিফিং করে জানিয়েছি।”

ভিডিও দেখুন এখানেঃ https://archive.ph/4EjCi

মূলত সরকার পতনের পর ছাত্রলীগ কর্মী রাব্বি রাজনৈতিক সুবিধা হাসিলের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন দলীয় প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করতে থাকে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে রাব্বিকে ছাত্রদলের মিছিলে স্লোগান দিতে দেখা যায়।

ভিডিও দেখুন এখানেঃ https://archive.ph/lUAs0

এদিকে পাথরঘাটায় যুবদল নেতাকে হত্যার ঘটনায় ছাত্রশিবিরকে অভিযুক্ত করার নিন্দা জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ছাত্রশিবির।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়: "বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের কতিপয় সন্ত্রাসীর হামলায় এক যুবদল কর্মী নিহত হওয়ার ঘটনায় উদ্দেশ্যমূলকভাবে ছাত্রশিবিরকে জড়ানো এবং গতকাল ১ জানুয়ারি ছাত্রশিবিরের উপজেলা শাখার সভাপতি হাফেজ মো. রাকিব হাসানের ওপর বর্বরোচিত হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।

এক যৌথ প্রতিবাদবার্তায় ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল নুরুল ইসলাম বলেন, “আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ করছি, বরগুনার পাথরঘাটায় যুবদল নেতা হত্যার ঘটনায় একটি মহল উদ্দেশ্যমূলকভাবে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ছড়ানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছে। মিডিয়া ও স্থানীয় বিএনপি নেতাদের ভাষ্যমতে, যুবদল নেতার হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতরা নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী। এ ঘটনার সাথে ছাত্রশিবির বা তার নেতা-কর্মীদের দূরতম কোনো সম্পর্ক নেই। অথচ রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য এবং প্রকৃত অপরাধীদের আড়াল করতে পরিকল্পিতভাবে ছাত্রশিবিরকে এ ঘটনায় জড়ানোর ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।
আমরা আরও উদ্বিগ্ন যে, এই মিথ্যা অভিযোগের জের ধরে একদল সন্ত্রাসী ছাত্রশিবির পাথরঘাটা উপজেলা শাখার সভাপতি হাফেজ মো: রাকিব হাসান ও তাঁর পরিবারের ওপর নির্মম হামলা চালিয়েছে। এটা দিবালোকের মতো স্পষ্ট যে, হত্যার উদ্দেশ্যে ধারালো অস্ত্র দিয়ে রাকিব হাসানের ওপর হামলা করা হয়, যা অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক ও কাপুরুষোচিত। হামলায় তিনি গুরুতর আহত হন এবং বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
"আমরা বিস্ময়ের সাথে লক্ষ করছি যে, বাংলাদেশের কিছু প্রসিদ্ধ সংবাদমাধ্যম সাংবাদিকতার নীতিকে বিসর্জন দিয়ে, কোনো প্রকার তথ্য যাচাই-বাছাই এবং সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলা ছাড়াই সন্ত্রাসীরা ছাত্রশিবিরের ছত্রছায়ায় আছে বলে মিথ্যা ও পক্ষপাতমূলক সংবাদ প্রচার করছে।
এভাবে মিথ্যা অভিযোগের মাধ্যমে ছাত্রশিবিরকে হেয়প্রতিপন্ন করা এবং নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালানোর অপপ্রয়াস শুধু নিন্দনীয় নয় বরং এটি সমাজে বিশৃঙ্খলা ও সন্ত্রাসবাদের উস্কানি দেয়।”
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, “ছাত্রশিবির সবসময় গণতন্ত্র, শান্তি, এবং শিক্ষার পরিবেশ রক্ষায় কাজ করে আসছে। আমরা কোনো ধরনের হত্যা ও জুলুমের রাজনীতি সমর্থন করি না। এ ধরনের ষড়যন্ত্রমূলক প্রচারণা ও হামলার ঘটনা সংগঠনের চলমান কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করার একটি সুপরিকল্পিত অপচেষ্টা।
আমরা স্পষ্টভাবে জানাতে চাই, এ ধরনের ষড়যন্ত্র কোনোভাবেই সফল হবে না।
আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই, অবিলম্বে উভয় ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রকৃত অপরাধীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।”
নেতৃবৃন্দ আহত সভাপতি হাফেজ মো: রাকিব হাসানের দ্রুত সুস্থতার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া কামনা করেন এবং এ ধরনের ষড়যন্ত্রমূলক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে শান্তিকামী সকল নাগরিককে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান।

Tvista Desk
Author

Tvista Desk

Sub Editor

Recent News